তুমুল বৃষ্টিতে গোটা যশোর শহরে হাটুপানি জমেছে। এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। রোববার (১৩ জুলাই) দুপুরে এই টানা বৃষ্টির পানিতে টইটুম্বুর হয়ে যায় শহরের নীচু এলাকা,বাড়ি-ঘর,মাঠ-বাজার। শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা, ঈদগাহ মোড়, প্যারিস রোড, রেলরোডসহ বিভিন্ন সড়কে পানি জমে রীতিমতো চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এতে পথচারী, স্কুলগামী শিক্ষার্থী, রোগী ও যানবাহনের চালকরা পড়েছেন চরম দুর্ভোগে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রতিবার বৃষ্টি হলেই এই দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বাসা থেকে বের হতে পারি না, বাচ্চাদের স্কুলে পাঠানো যায় না।
অন্যদিকে, প্যারিস রোডের এক দোকানী বলেন, রাস্তায় পানি উঠে দোকানের ভেতরে ঢুকে পড়ে। গ্রাহক আসতে পারে না, বিক্রি বন্ধ হয়ে যায়।
শুধু সাধারণ মানুষ নয়, জরুরি পরিসেবাও এ পরিস্থিতিতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। অ্যাম্বুলেন্স বা জরুরি যানবাহনের চলাচল ব্যাহত হচ্ছে, কারণ বৃষ্টির পানি রাস্তাকে প্রায় অচল করে দিচ্ছে। যশোর শহরের দীর্ঘদিনের এ অব্যবস্থাপনার নাম ‘ড্রেনেজ সমস্যা’। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, শহরের নকশা ও পরিকল্পনায় সঠিকভাবে ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় এই সমস্যা বারবার ফিরে আসছে। বৃষ্টির পানি বের হওয়ার পর্যাপ্ত ও কার্যকর পথ নেই, ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা।
জলাবদ্ধতায় অতিষ্ঠ যশোরবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, আমরা তো কর দেই, অথচ মৌলিক সেবাগুলো পাচ্ছি না। ড্রেনেজ উন্নয়ন তো সরকারের দায়িত্ব।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই ভিডিও ও ছবি শেয়ার করে অভিযোগ করছেন, শুধু নির্বাচনের আগে উন্নয়নের কথা বলা হলেও বাস্তবে কাজের কোনো অগ্রগতি নেই।
একই অবস্থা বিরাজ করছে যশোর শহরের বিভিন্ন পাড়া মহল্লায়। শহরের বেজপাড়া, শংকরপুর, খড়কি, রেলগেট, চোপদারপাড়া, ঘোপ জেল রোড, উপশহর, বকচর, আরবপুর, পুরাতন কসবা ও ধর্মতলাসহ বিভিন্ন এলাকার বাড়িতে পানি উঠেছে। ফলে নিদারুণ কষ্ট পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। সবাই দোষারোপ করছে পৌরসভা কর্তৃপক্ষের উপর।
এ ব্যাপারে যশোর পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা উত্তম কুন্ডু বলেন, বৃষ্টির আগে থেকেই শহরের সমস্ত ড্রেন পরিষ্কার করা হয়েছে। যাতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি না হয়, বৃষ্টির পানি দ্রুত বেরিয়ে যায়। কিন্তু কোন কিছুই কাজে আসছে না। শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে কর্তৃপক্ষ বিকল্প চিন্তা করছে বলে তিনি জানান।
খুলনা গেজেট/এসএস